বাঙ্গালীর নববর্ষ

বাঙ্গালীর নববর্ষ

– পূজা দাস (অতিথি লেখক)

৩৬৫দিন পার করে আমরা এক নতুন বছরে পা রাখি যা বাঙ্গালীদের কাছে নববর্ষ নামে পরিচিত। এখন আমরা সবাই ইংলিশ ক্যালেন্ডারই বেশি ব্যবহার করি প্রতিদিনের চলার পথে ,বাংলায় কোন মাস ,কত তারিখ চলছে কেউ জিজ্ঞাসা করলে  আমাদের ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়ার মতো অবস্থা হয়ে ওঠে। যাই হোক, উৎসব পালনে বাঙালিদের জুড়ি মেলা দুঃসহ ব্যাপার।কথায় আছে বাঙ্গালীদের ১২মাসে ১৩পার্বন।বাঙ্গালীদের প্রতিটি উৎসবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান অনস্বীকার্য।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা নানা গান ,কবিতা, আমাদের উৎসবের কথা মনে করিয়ে দেয়।

কিছু দিন আগেই গেল বসন্ত উৎসব।যেমন – “রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও…যাও গো এবার যাওয়ার আগে রাঙিয়ে দিয়ে যাও” গানটিতে ফুটেই উঠেছে বসন্ত উৎসব এর কথা। আবার বৈশাখ কে আহ্বান জানিয়েছেন, “এসো হে বৈশাখ ..এসো এসো” গানের কথাগুলো দিয়ে। নববর্ষের সকাল এই গানটা ছাড়া বেমানান। এই গানটিতে কবি বলেছেন পুরোনো কে ভুলে নতুনকে আহ্বান করার কথা। চেয়েছেন এই ধরিত্রী আবার নতুন আশায় পূর্ণ হয়ে উঠুক বৈশাখের উষ্ণ তাপপ্রবাহে।

“……মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা

অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা…”

নববর্ষ ও হালখাতা
নববর্ষ ও হালখাতা ঋণঃ এন কে রিয়েল্টর্স

পয়লা বৈশাখে, আমাদের নববর্ষের দিনে, সবাই নতুন জামা পরি,আর বিভিন্ন রকমের খাঁটি বাঙ্গালী খাবারের পদ খেয়ে দিনটি উৎযাপন করি। আমি ছোট্ট বেলা থেকে আমার বাবা-মায়ের কাছে শুনে এসেছি সবাইকে শুভ নববর্ষ বলে এই দিন বড়দের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে আশীর্বাদ নিতে হয়। আর এটাও দেখে এসেছি যে দাদু-ঠাকুমার সমাধিতে একটা করে ছোট্ট হাঁড়ি বেঁধে ,হাঁড়িটার তলায় একটা ছোট্ট ফুটো করে দিয়ে ওনাদের সমাধিতে জল ঢালা হয় গোটা বৈশাখ মাস ধরে। দোকানে দোকানে হালখাতা হয়। শরবত, মিষ্টির এলাহি বিতরণ। ছোটবেলায় দুষ্টুমি করে ঐ দিনই বেশি করে দোকানে দোকানে যেতাম মিষ্টি খেতে।

নববর্ষ পড়ার কয়েক মাস আগের থেকেই বাজারে শোনা যায়, “সেল …সেল..চৈত্র সেল শুরু হয়ে গেছে।“ দোকানে পা রাখার মতো জায়গা থাকে না এতো ভীড় হয়। গত বছর থেকে অবশ্য করোনা অতিমারীতে আমাদের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। চৈত্র সেলের আনন্দ বেশ কিছুটা ম্লান। এ বছরে অবশ্য ভ্যাক্সিন এসেছে। আশা করি এবার ভ্যাক্সিন এসে যাওয়ায় নববর্ষের আনন্দে ভাঁটা পড়বে না।

2 thoughts on “বাঙ্গালীর নববর্ষ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *